এক নির্যাতিতা স্ত্রীর ফরিয়াদ : একটি ঘটনা।

গল্পের লেখক একজন নির্যাতিতা স্ত্রীর ফরিয়াদ ও স্বামী থেকে তালাক প্রাপ্ত ঘটনা গল্প আকারে তুলে ধরেছেন। চলুন আমরা লেখকের এই শিক্ষণীয় গল্পটি পড়ুন…

এক নির্যাতিতা স্ত্রীর ফরিয়াদঃ একটি ছোট ঘটনার গল্প।

ফরিয়াদকুতুবে আলম, আরেফবিল্লাহ হযরত মাওলানা শাহ হাকীম মুহাম্মদ আখতার সাহেব দামাত বারাকাতুহুম এক বয়ানের মধ্যে তার স্বচক্ষে দেখা একটি ঘটনা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, এক লোক তার স্ত্রীকে ছয় সন্তানের মা হওয়া সত্ত্বেও একমাত্র স্বীয় নফসের দাসত্ব করতে গিয়ে তিন তালাক দেয়। তালাক দেওয়ার কারণ হলো, স্ত্রী কালো ও দেখতে খারাপ ছিল। লোকটির বক্তব্য হলো, আমাকে দিয়ে এই কালো মেয়েকে বিয়ে করিয়ে আমার মা ভুল করেছিলেন। দীর্ঘদিন পর্যন্ত আমি এই ভুলের মাশুল দিয়ে এসেছি। এখন আর দিব না। তাকে নিয়ে আমি আর জীবন যাপন করতে পারব না। আমি এখন কোনো সুন্দরী নারীকে বিয়ে করে সুখের সংসার রচনা করব।

স্বামীর মুখে এমন কথা শুনে স্ত্রী বলল, আমি যদি আপনার এতই অপছন্দনীয় হয়ে থাকি তাহলে এই ছয়-ছয়টি সন্তান কোত্থেকে এল? তাছাড়া আমাকে যদি আপনার পছন্দ না-ই হয়ে থাকে তবে শুরুতে আমাকে তালাক দিয়ে দিতেন, যাতে আমার অন্যত্রে বিবাহ বসা সহজ হত। এখন তো আমাকে ছয় সন্তানের জননী বানিয়ে তালাক দিচ্ছেন।

উত্তরে স্বামী বলল, আমি এতকিছু বুঝিনা। আমি নিরুপায়। আমার আর ধৈর্যে কুলাচ্ছে না। এখন আমি অনিন্দ্য সুন্দরী কোনো মেয়েকে বিয়ে করে ঘরে তুলব এবং তার সান্নিধ্যে থেকে আরাম আয়েশের মধ্যে ডুব দিয়ে বাকী জীবনটা কাটিয়ে দিব। এ বলে সে সত্যি সত্যি স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে দিল। স্ত্রীর অনুনয় বিনয়, কাকুতি মিনতি কিছুই তার কর্ণকুহুরে পৌঁছল না।

অবশেষে ঐ মহিলা যখন ব্যাথা – ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে ঐ লোকের ঘর থেকে বের হলো তখন সে দৃষ্টি তুলে আকাশের দিকে তাকাল আর তার বুক ফেটে এই ফরিয়াদ বের হলো-

হায়, আমার এ অবর্ণনীয় দুঃখের কথা কাকে শুনাব? হে আকাশের মালিক! আমি শুধু তোমার দিকে চেয়ে থাকলাম। এই জুলুমের বিচার তুমিই করো।

অতঃপর লোকটি দ্বিতীয় বিয়ে করল। স্ত্রী অবশ্য সুন্দরীই ছিল। কিন্তু হায়, ছয়মাস যেতে না যেতেই লোকটি প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হলো। তখন সুন্দরী স্ত্রী তাকে এই বলে পরিত্যাগ করে চলে গেল যে, এমন লোকের সাথে কিভাবে আমি জীবন যাপন করব?

আরও পড়ুন : আমার দ্বিতীয় বিয়ে! বিয়ের গল্প ১

প্যারালাইসিসে আক্রান্ত অবস্থায় লোকটি দশ বৎসর জীবিত ছিল। পেশাব-পায়খানা বিছানার মধ্যেই ত্যাগ করত। তার সীমাহীন কষ্ট ও দুর্ভোগ দেখে পাথর দিলওয়ালা মানুষের চোখেও পানি এসে যেত।

তাই ভাইগণ! আবারও বলছি, স্ত্রীকে কষ্ট দেওয়ার ব্যাপারে আজ থেকেই সাবধান হোন।

অতীতে তাকে কষ্ট দিয়ে থাকলে আজই তাঁর তেকে ক্ষমা চেয়ে নিন। তাকে বলুন, যদি তুমি আমার কোনো কথা বা কাজে কষ্ট পেয়ে থাকো তাহলে আমাকে মাফ করে দাও। আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে তাওফীক দিন। আমীন!! 

লেখকঃ মাওলানা মুহাম্মদ মুফীজুল ইসলাম। ( আদর্শ স্বামী স্ত্রী ২ ) 

এরপর পড়ুন>> স্ত্রীর সাথে দুর্ব্যবহার করে দাড়ি-টুপির প্রতি তার ঘৃণাভাব সৃষ্টি করবেন না।

প্রিয় পাঠক পাঠিকা, লেখক নির্যানিত স্ত্রীর ফরিয়াদ গল্পটি পড়তে ভালো লাগলে এটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করুন। আপনাদের সুন্দর মতামত ও উৎসাহ লেখকদের কে আরও ভালো লেখনিতে উৎসাহ যোগায়। – আমার বাংলা পোস্ট 

For more update please follow our Facebook, Twitter, Instagram , Linkedin , Pinterest , Tumblr And Youtube channel.

Leave a Comment